স্পর্শ অনুভূতি কমে যাওয়া, ঝিঁ ঝিঁ ভাব
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির কারণে যে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে সংবেদনশীল স্নায়ু-স্পর্শ, তাপ বা ব্যাথা যেহেতু কেমোথেরাপী শরীরের সমস্ত স্থানে প্রবাহিত হয় এবং ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করে, সেই জন্য এটি স্নায়ু কোষেরও ক্ষতি করতে পারে
যে সকল কেমোথেরাপি ঔষধ পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির সাথে সম্পর্কিত তা হলো প্ল্যাটিনাম ভিত্তিক ঔষুধ, Taxenes, Alkaloid, Thalidomide এবং Bortezomib এর অন্তর্ভূক্ত পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির উপসর্গ যে কোন সময় শুরু হতে পারে যার কারণে চিকিৎসায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে
উপসর্গগুলো হল:
- হাতের আঙ্গুল, পায়ের আঙ্গুল, হাত ও পায়ের নখের পাশে ব্যাথা বা জ্বালাপোড়া করা
- স্পর্শে অনুভূতি কমে যাওয়া
- কোন জিনিসপত্র তোলা বা কাপড় গোছগাছ করতে অসুবিধা হওয়া
- হাতে পায়ে ব্যাথা হওয়া, খিল ধরা বা দুর্বলতা অনুভূত হওয়া
- তাপমাত্রার সংবেদনশীলতা বেড়ে যাওয়া
- পেশী দুর্বল হওয়া এবং ভারসাম্যের সমস্যা হওয়া
- কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া
- ইচ্ছা শক্তি বা উদ্দীপনা কমে যাওয়া
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির ঝুঁকিতে আপনি বেশি থাকতে পারেন যদি আপনার আগে থেকেই ডায়াবেটিস, মাদকাসক্তি, অপুষ্টি ভিটামিন বি এর ঘাটতি থাকে বা পূর্বে কেমোথেরাপি বা রেডিও থেরাপি নিয়ে থাকেন বা সার্জারী হয়ে থাকে
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির উপসর্গ গুলো বেশী শক্তিশালী হয় কেমোথেরাপি চিকিৎসার পরক্ষণে এই উপসর্গ গুলো চিকিৎসার ৩-৫ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে উপসর্গ গুলো সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পায় বা কমে যায়, কিন্তু সমাধান হতে বেশ কয়েক মাসের প্রয়োজন হতে পারে
দু্র্ভাগ্যবশত, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ক্ষতি অপরিবর্তিত থাকে উপসর্গগুলো কেমোথেরাপি চিকিৎসার সময় হোক বা পরে সেগুলো আপনার চিকিৎসককে জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ আপনার কেমোথেরাপির ডোজ কমানো বা চিকিৎসায় আপনার বিশ্রাম বাড়ানো বা চিকিৎসায় দেরী করার জন্য আপনার চিকিৎকের সাথে পরামর্শ করে নিতে পারেন
আপনার উপসর্গগুলো উপশম করতে পারে এমন কিছু আরামদায়ক ব্যবস্থা নিম্নে যুক্ত করা হলোঃ
- আক্রান্ত স্থানকে সুরক্ষা করা, যেমন মোজা ও হাতের গ্লাভ্স পরা
- ম্যাসেজ, ফিজিও থেরাপি এবং চিকিৎসার বিশেষ পদ্ধতি আকুপাংচার, আকুপ্রেসার, ফিজিক্যাল থেরাপি প্রয়োগ করা
- বিনোদন থেরাপি (মেডিটেশন), পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া
- ভিটামিনের ব্যবহার করা (বিশেষ করে ভিটামিন-বি-১, বি-৬ এবং বি-১২) ওষুধের ডোজ সম্পর্কে আপনার স্বাস্থ্যের সেবা প্রাদানকারী কে জিজ্ঞাসা করতে পারেন প্রমঙ্গত: ভিটামিন E এবং নিয়াসিন আপনার স্থায়ুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ
- কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য Laxatives প্রয়োগ করা
- ব্যাথা বা অবসাদ না হওয়ার জন্য ঔষুধ দেওয়া
কিছু ব্যবহারিক টিপস্ বিবেচনা করতে পারেন যদি আপনার পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির উপসর্গ থাকে:
- হাতের এবং পায়ের অনুভূতি হ্রাস পাওয়া জায়গাগুলো আঘাত থেকে রক্ষা করুন
- সচেতন হোন অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম থেকে (যেমন: আপনার গোছলের পানি স্বাভাবিক তাপমাত্রার হবে এবং ঘরের কাজের জন্য গ্লাভস ব্যবহার করবেন )
- সবসময় সচেতন থাকুন আপনার হাত বা পায়ে যেন আঘাত না লাগে, পুড়ে না যায়, কেটে না যায় বা ঘর্ষণ না লাগে
- মদ্যপান করবেন না; কারণ সেক্ষেত্রে উপসর্গগুলো আরো খারাপ হতে পারে
- যদি চরাফেরায় ভারসাম্যের প্রয়োজন হয় তাহলে হাতল বা লাঠি ব্যবহার করুন
আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন নীচের উপসর্গগুলো দেখা দিলে——
- আপনি হাতে/পায়ের তালুতে খোঁচা খোঁচা ব্যথা অনুভব করলে
- মাটি থেকে জিনিস তুলতে অথবা জামার বোতাম লাগাতে অসুবিধা হলে
- ভারসাম্য কমে গেলে
- কানে শোঁ শোঁ শব্দ শুনলে অথাব কানে কম শুনলে
- চোখে ঝাঁপসা দেখলে
- হাতে ও পায়ে ব্যথা অনুভব করলে
- কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা প্রস্রাবে কোন সমস্যা দেখা দিলে
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির উপসর্গগুলো চ্যালেঞ্জের সাথে মোকাবেলা করলে আপনার জীবনের গুণগত মান বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আপনার চিকিৎসক বা সেবাদানকারীকে জিজ্ঞেস করুন কিভাবে উপসর্গগুলো থেকে উপশম পাওয়া যাবে