সম্প্রতি মারাত্মক তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোম করোনাভাইরাস 2 (SARS-CoV-2) নামে একটি নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চিহ্নিত করা হয় যেটি ২০১৯ সালে চীনে সর্বপ্রথম শুরু হয়। এই রোগটিকে করোনভাইরাস রোগ ২০১৯ (COVID-19) বলা হয়।
২০২০ সালের মার্চ মাসে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন ( WHO) COVID-19 কে মহামারী হিসাবে ঘোষণা করে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC) এবং WHO সহ জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো মহামারীটি পর্যবেক্ষণ করছে এবং তাদের ওয়েবসাইটে আপডেট পোস্ট করছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলি এই রোগের প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার বিষয়টিও দেখছে।
COVID-19 কীভাবে ছড়ায়?
ডাটা অনুযায়ী এটি খুব ঘনিষ্ঠ ও কাছাকাছি (প্রায় 6 ফুট বা 2 মিটারের মধ্যে) এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। যখন ভাইরাসে আক্রান্ত কেউ কাশি, হাঁচি বা কথা বলে , তখন শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এটি ছড়ায়।
COVID-19 এর লক্ষণগুলি কী কী?
COVID-19 এর লক্ষণগুলি খুব অল্প থেকে মারাত্মক হতে পারে এরমধ্যে জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট অন্যতম। কিছু ক্ষেত্রে কোন লক্ষণ নাও থাকতে পারে। সাধারণত এক্সপোজারের ২ দিন থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলি দেখা দেয়।
COVID-19 কি প্রতিরোধ বা চিকিৎসার মাধ্যমে প্রতিকারযোগ্য?
করোনভাইরাস রোগ 2019 (COVID-19) এর প্রতিরোধের জন্য কোন ভ্যাকসিন নেই। COVID 19 রোগের চিকিত্সার জন্য কোন এন্টিভাইরাল ঔষধ নেই। অন্যান্য লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।
অসুস্থ না হওয়ার জন্য আমি কী করতে পারি?
WHO এবং CDC ,COVID-19 এড়ানোর জন্য কিছু সতর্কতা অনুসরণ করার পরামর্শ দেয়:
বড় অনুষ্ঠান, কোন প্রোগ্রাম বা গণ জমায়েত এড়িয়ে চলুন।
অসুস্থ বা লক্ষণ রয়েছে এমন যে কোনও ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ (প্রায় 6 ফুট বা 2 মিটারের মধ্যে) এড়িয়ে চলুন।
আপনার এলাকায় যদি কোভিড -১৯ ছড়িয়ে পড়ে তবে নিজের এবং অন্যদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখুন, বিশেষত আপনার যদি গুরুতর অসুস্থ্য হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কমপক্ষে 20 সেকেন্ডের জন্য আপনার হাত সাবান পানি দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করবেন বা অ্যালকোহল সমৃদ্ধ হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন যাতে কমপক্ষে 60% অ্যালকোহল থাকে।
কাশি বা হাঁচির সময় আপনার কনুই বা টিস্যু দিয়ে আপনার মুখ ঢাকবেন। ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত পাত্রে ফেলুন।
হাত দিয়ে আপনার নিজের চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
প্রতিদিনের নিয়মিত স্পর্শ করা পৃষ্ঠগুলি পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখুন।
আপনার যদি দীর্ঘস্থায়ী কোন রোগ থাকে অথবা গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি বেশি থাকে, তবে নিজেকে রক্ষা করার অন্যান্য উপায় সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
আমার কি মাস্ক পরা উচিত?
জনসাধারণের জায়গাগুলিতে যেমন মুদি দোকান, যেখানে অন্যের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়ানো কঠিন , সেখানে কাপড় দিয়ে মুখ আচ্ছাদনের( মাস্ক ব্যবহার করার) পরামর্শ দেয়। বিশেষভাবে বিস্তৃত ঘনবসতি অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য। এই হালনাগাদ পরামর্শটি এমন একটি ডাটা ভিত্তিক যা দেখায় যে, COVID-19-এ আক্রান্ত লোকেরা নিজেদের রোগ লক্ষণ বোঝার আগেই অন্যদের মধ্যে ভাইরাসটি সংক্রমিত করতে পারে। জনসমক্ষে মাস্ক ব্যবহার করলে যাদের লক্ষণ নেই তাদের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা হ্রাস পাবে। নন-মেডিকেল কাপড়ের মাস্ক জনসাধারণের জন্য এবং সার্জিক্যাল মাস্ক ও N -95 স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের জন্য সংরক্ষণ করা উচিত।
আমি কি ভ্রমণ করতে পারবো?
যদি আপনি ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন প্রথমে ভ্রমণের শর্ত এবং পরামর্শগুলি দেখে নিন। যদি আপনার শরীরের অবস্থা শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমণ এবং জটিলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে, তাহলে ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া উচিত।
আমি COVID-19-এ আক্রান্ত বা অসুস্থ থাকলে কী করতে পারি?
যদি আপনার লক্ষণগুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে এবং আপনি যদি COVID-19 ভাইরাসের সংস্পর্শে এসে থাকেন তবে চিকিত্সার পরামর্শের জন্য ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার যদি হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে কল করুন যাতে স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারীরা আপনার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারে।
অসুস্থতা না ছড়াতে নিম্নলিখিত সাবধানতা অবলম্বন করুন:
বাড়িতে অবস্থান করুন। কাজের জায়গা,স্কুল কলেজ, জনবহুল এলাকায় যাবেন না শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য চিকিৎসাকেন্দ্রে যেতে পারেন।
সম্ভব হলে সর্বজনীন পরিবহণ এড়িয়ে চলুন।
অন্যান্য লোকের চারপাশে থাকাকালীন অবস্থায় মাস্ক পড়ুন।
নিজের বাড়ির অন্যদের থেকে যতটা সম্ভব নিজেকে বিচ্ছিন্ন করুন।
সম্ভব হলে আলাদা বেডরুম এবং বাথরুম ব্যবহার করুন।
থালা – বাসন, চশমা, বিছানাপত্র এবং অন্যান্য গৃহস্থালীর আইটেম অন্যের সাথে শেয়ার করবেন না।